নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়

1st March 2021 9:57 pm বর্ধমান
নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) : পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় ভোট করানো নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশনকে এক হাত নিলেন   তৃণমূলের সাংসদ শতাব্দী রায় । সোমবার পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে রোড শোয়ে অংশ নিয়ে সংসদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি শতাব্দী রায় বলেন,“পরিকল্পনা মাফিক রুল তৈরি করে পশ্চিমবঙ্গে  আট দফায় ভোট করানো হচ্ছে ।অথচ অন্য রাজ্যে সিট সংখ্যা বেশী থাকলেও ভোট করানো হচ্ছে ১-২ দফায়। ”একই সঙ্গে তিনি বলেন ,’খেলা হবে ’স্লোগানটা হিট হয়েছে।এরপর ভোটের সময়ে  ডার্বি এবং আইপিএলের খেলাটা হবে।’ রাজ্যে আট দফায় ভোট করানো নিয়ে সম্প্রতি  নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলে ছিলেন সদ্য বিদায়ী রাজ্যের মন্ত্রী তথা বলিষ্ঠ তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এবার সাংসদ শতাব্দী রায় ও একই পথে হাঁটায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে । ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে যাওয়ার পর এদিনই প্রথম পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসিতে অনুষ্ঠিত হল তৃণমূলের রোড শো । যে রোড শোয়ে আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে ছিলেন অভিনেত্রী তথা সাংসদ শতাব্দী রায় । এদিন গলসির কালিমতিদেবী স্কুল মাঠ থেকে রোড শো শুরু হয় ।প্রায় ৪ কিমি পথ পরিক্রমা করে গলসির চৌমাথা হয়ে গলসি হাই স্কুলের কাছে পৌছে শেষ হয় রোড শো । গলসি ছাড়াও জেলায় খণ্ডঘোষ,রায়না , সাঁকো , ভুরি সহ বিভিন্ন এলাকার বহু তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক রোড শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন । রোড শোয়ে জন প্লাবন দেখে শতাব্দী রায় নিজেই উচ্ছাসে ফেটে পড়েন।পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান মমতাজ সংঘমিতা ছাড়াও গলসির বিধায়ক অলোক মাঝি, খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ রোড শেয়ে সামিল হয়েছিলেন । রোড শো শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শতাব্দী রায় আরও বলেন ,জনপ্লাবনই প্রমান করে দিচ্ছে বাংলায় ফের তৃণমূলই ক্ষমতায় আসছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন । সারা রাজ্যে ভোটের প্রচারে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি বীরভূমেও ভোটের  প্রচারে থাকবেন বলে শতাব্দী রায় এদিন জানিয়ে দেন ।রাজনৈতিক মহলের দাবি নির্বাচন কমিশনের এই রাজ্যে আট দফায় ভোট করানো নিয়ে প্রকাশ্য জনসভা থেকে শতাব্দী রায়-ই প্রথম বিরুদ্ধাচারণ করলেন এমনটা নয়।ভোট ঘোষনার পর গত শনিবার কালনার ধাত্রীগ্রামের কালিনগরে অনুষ্ঠিত তৃণমূলের প্রথম নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও নির্বাচন কমিশনকে এক হাত নিয়েছিলেন । তৃণমূল কংগ্রেসের বলিষ্ঠ নেতা সুব্রত বাবু ওই দিন নির্বাচন কমিশনকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন ,“নির্বাচন কমিশন আমাদের কে (তৃণমূল কংগ্রেস ) অপছন্দ করে । তাই এই ভাবে জেলা গুলিকে ভাগ করে আট দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত বিজ্ঞান ভিত্তিক নয় , আক্রোশ ভিত্তিক বলে সুব্রত বাবু মন্তব্য করে ছিলেন । ” নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের এই ভাবে আক্রমন করার বিষয়টি নিয়ে যদিও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি নেতৃত্ব । গলসি নিবাসী জেলা বিজেপি নেতা জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন ,এবারের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের যে ভরাডুবি হবে সেটা বুঝে গিয়েছেন তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা । তাই আগাম নির্বাচন কমিশনের দিকেই তৃণমূলের  নেতা নেত্রীরা আঙুল তোলা শুরু করে দিয়েছেন । মুখে  বিজেপি হারবে বলে তৃণমূলের  নেতা নেত্রীরা যাই দাবি করুন না কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী  হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে । নির্বাচন কমিশনের দিকে তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের আঙুল তোলা দেখেই সেটা আরও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ” 

    





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।